ঢাকায় প্রথম ফ্ল্যাট কেনার বেস্ট এলাকা

ঢাকায় প্রথম ফ্ল্যাট কেনার বেস্ট এলাকা

দেশে কিংবা দেশের বাইরে বাস করছেন, চাকুরি বা মাঝারি মানের ব্যবসা করে জীবনও কাটছে স্বাচ্ছন্দে। তার পাশাপাশি পরিবার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে রাজধানী ঢাকায় কিনতে চাচ্ছেন সাধ্যের মধ্যে ফ্ল্যাট। তাহলে এই লেখা আপনার জন্যই। সাধারণত রাজধানীতে ফ্ল্যাটকেনা ব্যয়বহুল, তবে হ্যা, সামর্থের মধ্যেও মিলতে পারে পছন্দের আবাসস্থল। তাই যারা দেশে কিংবা দেশের বাইরে থেকে ঢাকায় বাজেটের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে চান তাদের জন্য এই লেখা হতে পারে বেশ প্রয়োজনীয়।

বলে রাখা ভালো, রাজধানী ঢাকায় ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক বেশি বৈচিত্র। গুলশান/ বাড়িধারায় কোন কোন লাক্সারিয়াস ফ্ল্যাটের দাম ১০ থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আবার তার থেকে কয়েক কিলিমিটার দুরে ফ্ল্যাট পেতে পারেন ৫০ লাখ টাকার মধ্যেই। এই শহরে জায়গার দামে তারতম্যের কারনে ফ্ল্যাটের দামেও ব্যাপক পার্থক্য দেখা যায়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে নিজের পছন্দ মতো জায়গায় ফ্ল্যাট পেতেও বহু বেগ পেতে হয়। যাই হোক সাধারণত যেসব জায়গায় এখন মধ্যবিত্তের ফ্ল্যাট বেশি পাওয়া যায় তা নিয়েই আমাদের এই লেখা। আর হ্যা, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মধ্যবিত্তের বাজেটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফ্ল্যাট পাওয়া যাচ্ছে এপেক্স প্রপার্টিতে। এক পলকে দেখে নিতে পারেন সেই অফারগুলোও।

মিরপুর

রাজধানীর সবচেয়ে বেশি মানুষ বাস করে যে এলাকায় সেটি মিরপুর। আয়তনেও বেশ বড় মিরপুর। তার সাথে চর্তুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা এই এলাকার প্রতি আগ্রহ বাড়াচ্ছে নতুন ফ্ল্যাট ক্রেতাদের। মিরপুর-১ থেকে মিরপুর-১৪, প্রতিটি সেকশনেই গত দুই দশকে হয়েছে বড় পরিবর্তন। পাশাপাশি প্রশস্ত রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, স্টেডিয়াম, মেট্রোরেলসহ নানা কিছু মিরপুরকে করেছে আরোও সমৃদ্ধ। একদিনে শেওড়াপাড়া-আগারগাঁও, অন্যদিকে মিরপুর-১৪ ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, আরেকদিকে কালসি-ইসিবি চত্বর কিংবা গাবতলী সবদিক দিয়েই মিরপুরে প্রবেশ করা যায় অনায়াসে। এমন চর্তুমুখি যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্যই এখন বসবাসের জন্য অনেকেই বেছে নিচ্ছেন মিরপুরকে। যারা নতুন ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী তারাও দেখে নিচ্ছেন মিরপুরের বিভিন্ন লোকেশনে। এই এলাকায় মিলবে বিভিন্ন সাইজের ফ্ল্যাট। ৮৫০ স্কয়ার ফিট থেকে শুরু করে ২০০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাটই চোখে পরবে বেশি। দামের ক্ষেত্রেও ঢাকার অন্য যেকোন এলাকার চেয়ে কম মূল্যেই পাওয়া যাবে এখানকার ফ্ল্যাট। এলাকাটিতে কাজ করা বিভিন্ন বিল্ডার্স কোম্পানির সাথে কথা বলে জানা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দাম পড়বে ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা প্রতি স্কয়ার ফিট। তবে লোকেশন বুজে দামের পার্থক্য হতে পারে।

রামপুরা-বাড্ডা

বাড্ডা কিংবা রামপুরা এলাকার কথা বললেই চোখের সামনে ভেসে উঠে হাতিরঝিলের ঝলমলে আলো। এই দুই এলাকাই ঢাকার সৌন্দর্যের প্রতিক হাতিরঝিলের নিকটে অবস্থিত। আর এদিকে বসবাস মানেই সকাল কিংবা সন্ধ্যায় হাতিরঝিলে হাটতে আসার সুযোগ। তবে সবচেয়ে বড় স্বস্তির জায়গা, এই এলাকাগুলোতে ফ্ল্যাটের দামও বেশ সহনীয়। বাড্ডা ঢাকার অন্যতম ব্যয়বহুল এলাকা গুলশানের খুব নিকটে হলেও এখানে বাজেটের মধ্যেই কেনা সম্ভব সুন্দর ফ্ল্যাট। এলাকাটিতে সাধারণত ১০০০ থেকে ২২০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাটই বেশি চোখে পড়বে। এখানকার বিল্ডার্স কোম্পানিগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, প্রতি স্কয়ার ফিট লোকেশন ভেদে ৭ থেকে ১০ টাকার মধ্যে দাম পড়বে। বাড্ডার পাশেই রামপুরা এলাকা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের অফিসও এখানে। বর্তমানে রামপুরার সবচেয়ে জনপ্রিয় আবাসিকের নাম বনশ্রী। যেখানে পরিকল্পিত আবাসনের সব ধরনের সুযোগ সুবিধাই রয়েছে। সাধ্যের মধ্যে নিজের পছন্দের ফ্ল্যাট কিনতেও বহু পরিবার এখন বনশ্রীকে বেছে নিচ্ছে। বনশ্রী ও আশপাশের এলাকায় পছন্দের ফ্ল্যাটের দামও রয়েছে অনেকটা হাতের নাগালে। এখানে মিলবে ৯শ থেকে দুই হাজার স্কয়ার ফিটের বহু ফ্লাট। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানে ফ্লাটের দাম পড়বে ৬ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা প্রতি স্কয়ার ফিট।

বসুন্ধরা

বসুন্ধরা রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে পরিকল্পিত ও নান্দনিক আবাসিক এলাকা। ‍সুবিশাল রাস্তা, ফুলে ভরা গাছপালা, খেলার মাঠ, স্টেডিয়াম, ভালো মানের স্কুল, মাদ্রাসা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় সব মিলে এলাকাটি হয়ে উঠেছে আবাসনের উজ্জল উদাহরণ। তার সাথে ২৪ ঘন্টার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বসুন্ধরাকে করে তুলেছে বিশ্বস্ত আবাসিক। এলাকাটিতে এখন উচ্চবিত্তদের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। ব্লক ভেদে ফ্ল্যাটের দামেও রয়েছে বেশ তারতম্য। একটু স্বাচ্ছন্দের জীবন আর ভাড়া দেয়ার ঝামেলা এড়াতে অনেক অবসর প্রাপ্ত সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা এখন বসুন্ধরাকে বেছে নিচ্ছেন। রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে তিনশ ফিট রাস্তা ধরে অনায়াসেই প্রবেশ করা যায় বসুন্ধরায়, অন্যদিকে যমুনা ফিউচার পার্কের সাথেই রয়েছে বসুন্ধরা আবাসিকের মেইন গেইট। এছাড়াও নতুন বাজার একশ ফিট রাস্তা ধরেও প্রবেশ করা যাবে বসুন্ধরা আবাসিকে। এলাকাটির “এ ব্লক” থেকে “ই ব্লক” পর্যন্ত ফ্ল্যাট কিনতে গুনতে হবে ভালো মানের অংক। তবে “এফ ব্লক” থেকে পরের ব্লকগুলোতে মিলবে অনেকটা সামর্থের মধ্যেই ফ্ল্যাট। এসব এলাকায় সাধারণত ১১০০ থেকে ২৫০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাটই বেশি চোখে পড়বে। লোকেশন ভেদে দামও পড়বে সাড়ে ছয় হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা প্রতি স্কয়ার ফিট।

মোহাম্মদপুর

মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চমধ্যবিত্তের জন্য ঢাকার আরেক জনপ্রিয় আবাসিক এলাকার নাম মোহাম্মদপুর। ধানমন্ডীর নিকটে হওয়ায় অনেকেই থাকতে চান এই এলাকায়। লোকেশনের দিক থেকে মোহাম্মদপুর ধানমন্ডির ঠিক পরেই অবস্থিত। এলাকাটির আরেক পাশে রয়েছে বেড়িবাধের রাস্তা, যা দিয়ে গাবতলী কিংবা পুরান ঢাকার বাবু বাজারের দিকে বের হওয়া যায়। মোহাম্মপুরে রয়েছে ঢাকার আদি ও বিখ্যাত বহু খাবারের রেস্টুরেন্ট। শুধু তাই নয় এলাকাটিতে রয়েছে ঐতিহাসিক শিয়া মসজিদ, স্কুল-কলেজ, প্রশস্থ রাস্তাঘাট আর পরিকল্পিত নগরায়নের সুবিধা। নানাবিধ সুবিধার এই এলাকায় বাড়ছে আবাসনের সংখ্যাও। নতুন নতুন বহু ভবন, কনডোমিনিয়াম প্রজেক্ট গড়ে উঠছে মোহাম্মদপুরে। দামও ঢাকার অন্য যেকোন এলাকার চেয়ে খানিকটা কম হওয়ায় অনেকেই ভাবছে এই এলাকার কথা। সাধারণত মোহাম্মদপুরে ৯০০ থেকে ২২০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য পাওয়া যায়। যেগুলো লোকেশন ভেদে দাম পড়বে ৬ হাজার থেকে ৯ হাজার টাকার মধ্যে। তবে বসিলা ব্রীজ এর আশপাশে বেড়িবাঁধ এলাকায় এর চেয়েও কম মূল্যে পেতে পারেন পছন্দের ফ্ল্যাটটি।

উত্তরা দিয়াবাড়ি

মেট্রোরেলের শেষ স্টেশন হিসেবে এখন অধিক জনপ্রিয় উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকা। মুল উত্তরা এখন বিত্তশালীদের এলাকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এই এলাকায় ফ্ল্যাট কেনার চিন্তা করছেন অনেকেই। উত্তরার সবচেয়ে বড় সুবিধা মনোরম পরিবেশে বসবাস। প্রশস্থ রাস্তাঘাট, গাছপালা, লেক সব মিলে আবাসিক হিসেবে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উত্তরা। এছাড়া উত্তরা ১৫, ১৬,১৭ নং সেক্টর ও আশপাশে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন আবাসন। পরিকল্পিত আবাসনের সুবিধা নিতে অনেকেই এখন এই এলাকায় ফ্ল্যাট বুকিং দিচ্ছেন। এই এলাকার আরেকটি সুবিধা হলো এখানে বাজেটের মধ্যে মিলবে কাঙ্খিত ফ্ল্যাট। এলাকাটির নিকটেই রয়েছে মিরপুর ডিওএইচএস ও মিরপুর-১২ নম্বর সেকশন। তবে অসুবিধা হচ্ছে এই এলাকায় এখনো গড়ে উঠেনি তেমন কোন স্কুল-কলেজ, বাজারঘাট। তবে যাদের নিজস্ব গাড়ি রয়েছে তারা অনায়াসে উত্তরার বিভিন্ন বাজার কিংবা মিরপুর-১২ থেকেও তাদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পারেন। দিয়াবাড়ি এলাকায় মিলবে ১১০০ স্কয়ার ফিট থেকে ২৫০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট। লোকেশন ও সুবিধা ভেদে দামও পড়বে ৬ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা প্রতি স্কয়ার ফিট।

প্রতিদিনের কাজের ব্যস্ততার কারণে আপনার হয়তো মনের মতো একটা ফ্ল্যাট খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে যাবে। আর তাই প্রপার্টি কেনা-বেচা-ভাড়ার জন্য সব ধরণের সহযোগীতা করতে আপনার পাশে আছে এপেক্স প্রপার্টি। ঘরে বসেই আপনি খুঁজে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রপার্টি, এবং পেতে পারেন লিগ্যাল কাজপত্র যাচাই-বাচাই, হোম লোনসহ সব ধরণের সেবা এপেক্স প্রপার্টি থেকে।


There are no comments yet

^ Go up