অপ্রদর্শিত অর্থ আবাসনে বিনিয়োগ সুবিধা দেয়ার দাবি

অপ্রদর্শিত অর্থ আবাসনে বিনিয়োগ সুবিধা দেয়ার দাবি

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট ঘেষণায় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১০ শতাংশ কর দিয়ে যে কেউ আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ পাবে। যেই সুবিধা চলমান ছিলো পরের অর্থবছরেও। তাতে করোনার ধাক্কা কাটিয়ে গতিও ফেরে আবাসন খাতে। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সেই সুবিধা তুলে নেয়ার ঘোষণা দেয় অর্থমন্ত্রী। আর তাতেই মনক্ষুন্ন আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা।

এমনিতেই বিশ্বব্যাপী নির্মান সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় চাপে পড়েছে আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা। তার উপর করোনা মহামারি আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে আয়ও কমে গেছে বেশিরভাগ মানুষের। এমন অবস্থায় অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ সুবিধা বন্ধ হলে আবাসন খাতের উপর বাড়তি চাপ আসবে বলেই মনে করে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব।

 

 

এই বাস্তবতায় আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ বা কালোটাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-রিহ্যাব। একই সঙ্গে জমি ও ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয়, নির্মাণসামগ্রীর খরচ কমানোসহ আবাসন খাতের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন।

এ দিন তিনি আরো বলেন, ‘রিহ্যাবের বাজেট প্রস্তাবে আমরা অপ্রদর্শিত অর্থ বিনা প্রশ্নে বিনিয়োগের সুযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের এ দাবি বিবেচনা করা হয়নি।’

এছাড়া জমি কিংবা ফ্লাট নিবন্ধনে অতিরিক্ত কর নেয়া হয় উল্লেখ্য করে রিহ্যাব নেতারা তা কমানোর পক্ষে মত দেন। বলেন,‘বর্তমানে জমি-ফ্ল্যাট নিবন্ধনে খরচ নেওয়া হয় ১০ থেকে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে। আমরা নিবন্ধন খরচ ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কারণ, নিবন্ধন ব্যয় কম হলে ক্রেতারা জমির সঠিক মূল্য দেখাতে উৎসাহিত হবেন। ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ কমে আসবে। কিন্তু এই দাবিও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।’

 

 

আবাসন ঋণের জন্য বিশেষ তহবিল গঠনের বিষয়েও কথা বলেন আবাসন ব্যবসায়ীরা।  বলেন“হাউজিং লোন” নামে ২০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন (রিফিন্যান্সিং) তহবিল গঠনের দাবি থাকলেও প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে এই তহবিল গঠনের কোনো প্রতিফলন নেই। কোনো দাবি পূরণ না হওয়ায় প্রস্তাবিত বাজেটের ফলে আবাসন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন রিহ্যাবের নেতারা।

আবার নির্মাণসামগ্রীর উপর বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রস্তাবের সমালোচনাও করেন আবাসন ব্যবসায়ীরা। বলেন, ‘আবাসন খাতের অন্যতম প্রধান উপকরণ এমএস রডের দাম গত কয়েক মাসে দফায় দফায় বেড়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আমরা চেয়েছিলাম ইস্পাতের কাঁচামালের ওপর শুল্ক–কর কমানো হোক। সেটি না করে উল্টো বিক্রয় পর্যায়ে প্রতি টন বিলেট ও রডের ওপর ২০০ টাকা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। আবার লিফট আমদানিতে শুল্ক-কর ১১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের তার, পাইপ, জিআই ফিটিংসসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রীর ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। হঠাৎ করে এক লাফে এসব নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পেলে ফ্ল্যাটের দাম আরও বেড়ে যাবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান আবাসন ব্যবসায়ীরা। তাই বাজেট চূড়ান্ত করার সময় নির্মাণসামগ্রীর দাম কমাতে সরকারকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।


There are no comments yet

^ Go up