উচ্চবিত্তের পছন্দের ফ্লাট যে এলাকায়।

উচ্চবিত্তের পছন্দের ফ্লাট যে এলাকায়।

বাংলাদেশে জন্মেছেন কিন্তু চাকুরি বা ব্যবসার সুবাদে বাস করছেন অন্য দেশে। এমন প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগের স্বপ্ন নিজ দেশের রাজধানীতে একটি বাড়ি কিংবা ফ্লাট কেনার। তবে বাড়ির স্বল্পতায় বড় অংশটি এখন ঝুঁকছে রেডি ফ্লাটের দিকে। আবার অনেকেই আছেন যারা দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় শহরের কোন এলাকায় ফ্লাট কিনবেন তা বুঝতে পারছেন না। আশা করি আমাদের এই লিখা আপনাকে রাজধানী ঢাকার কোথায় ফ্লাট কিনবেন সেই উত্তর পেতে সহায়তা করবে। এই অংশে আমরা যারা উচ্চবিত্ত তারা যেই এলাকায় ফ্লাট কিনতে পছন্দ করেন সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই। সাধারণত ফ্লাট কেনার ক্ষেত্রে এলাকার অবস্থান, যাতায়াত ব্যবস্থা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, বাজার ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে একজন ক্রেতা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। আমাদের এই লিখা আপনাকে আপনার ভবিষৎ বাসস্থান কোথায় হবে তার একটি গাইডলাইন দিতে পারবে।

ধানমন্ডি:

রাজধানী ঢাকার অন্যতম জনপ্রিয় আবাসিক এলাকার নাম ধানমন্ডি। যেই এলাকাটিতে রয়েছে ধানমন্ডি লেক। বাড়ি থেকে বের হয়ে লেকের পাশে হাটা বা ব্যয়াম করা যাবে এমনটা ভেবে অনেকেই এখানে ফ্লাট কিনতে উৎসাহিত হন। তবে উচ্চবিত্তের এলাকা হিসেবে পরিচিত এলাকাটিতে ফ্লাটের দাম ঢাকার অন্য যেকোন এলাকার চেয়ে বেশি। সবচেয়ে বড় কথা চাইলেও এখানে ফ্লাট পাওয়া যায়না। তবে ধানমন্ডির আশপাশের এলাকাগুলোতে ইদানিং তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন ফ্লাট।

 

 

ধানমন্ডিতে ফ্লাট কেনার সবচেয়ে বড় সুবিধা যাতায়াত ব্যবস্থা। এর চতুরদিকে বের হওয়ার রাস্তা রয়েছে। ধানমন্ডির একপাশে রয়েছে শহরের অন্যতম জনপ্রিয় নিউ মার্কেট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ, পিজি হাসপাতাল, জাতীয় সংসদ ভবন রয়েছে ধানমন্ডির কাছাকাছি লোকেশনে। আজিমপুর মিরপুর সড়ক ধরে যাওয়া যাবে ঢাকা সহ দেশের যেকোন স্থানে। পেছনে মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের রাস্তা মিলেছে একপাশে গাবতলী অন্যপাশে বাবু বাজার। নামিদামি স্কুল, কলেজ সহ বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ধানমন্ডিতে। রয়েছে ল্যবএইড, আনোয়ার খান মর্ডান, স্কয়ারের মতো স্বনামধন্য বেসরকারি হাসপাতাল।

 

গুলশান, বনানী  

রাজধানী ঢাকায় উচ্চবিত্তের আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান। যার পাশেই রয়েছে বনানী এলাকা।

 

 

গুলশান-১, গুলশান-২, বাড়িধারা, বনানী সব মিলে উচ্চবিত্তের প্রথম পছন্দ এখন এই এলাকাগুলো। বিভিন্ন দেশের এম্বেসির জন্য এলাকাটি পরিচিতি পেয়েছে বিশ্বব্যাপী। কূটনৈতিকদের থাকার জন্য প্রথম পছন্দও গুলশান ও বাড়িধারা এলাকা। হাতিরঝিল হয়ে গুলশান পর্যন্ত বিশাল লেক এলাকাটির সৌন্দর্য বাড়িয়েছে কয়েকগুন। তাই রাজধানী ঢাকার অন্য যেকোন এলাকার চেয়ে ফ্লাটের দাম বেশি গুলশানে। অন্যদিকে আরেকটি লেক গুলশান ও বনানীকে বিভিক্ত করলেও সৌন্দর্য বাড়িয়েছে কয়েকগুন। গুলশানের পশ্চিম পাশে বনানী ঘেষে প্রধান সড়ক ধরে যাওয়া যাবে এয়ারপোর্ট, কিংবা ঢাকার যেকোন প্রান্তে। আরেকপাশে হাতিরঝিলের পাশ ঘেষে রয়েছে গুলশান থেকে বের হওয়ার পথ। পূর্ব প্রান্তে বাড্ডা এয়ারপোর্ট রাস্তা ধরেও বের হওয়ার সুযোগ রয়েছে। গুলশানে রয়েছে ইউনাইটেড হাসপাতাল, পাশেই যমুনা ফিউচার পার্ক, বিভিন্ন দেশের নামিদামি খাবার হোটেলতো রয়েছেই। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, কলেজ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে বেশ কয়েকটা। এছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের এম্বেসি রয়েছে গুলশান, বাড়িধারা এলাকায়।

 

উত্তরা

মূল শহরের উত্তর প্রান্তে অবস্থিত উত্তরা এখন আরেক জনপ্রিয় আবাসিক এলাকা। এয়ারপোর্টের নিকটবর্তি হওয়ায় অনেকেই এখানে বাস করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।

 

 

এই এলাকাটিতেও রয়েছে নয়নাভিরাম লেক। প্রশস্ত রাস্তা, সুন্দর যাতায়াত ব্যবস্থা, শিশুদের খেলার মাঠ, স্কুল কলেজ এমন নানা কারনে এই এলাকাতেও বাড়ছে উচ্চবিত্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফ্লাটের দামও। নতুন করে স্বপ্নের মেট্রোরেল মূল শহরের সাথে যুক্ত করবে উত্তরাকে। মেট্রোরেলের শুরুটাও হয়েছে উত্তরা থেকেই। বিভিন্ন সেক্টরে বিভক্ত উত্তরার দুই প্রান্তকে ভাগ করেছে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক। যেই সড়ক ধরে এয়ারপোর্ট, মূল শহর কিংবা গাজীপুর যাওয়া যায় খুব সহজেই। আরেক প্রান্তে আব্দুল্লাহপুর হয়ে আশুলিয়া দিয়ে সাভার বের হওয়া যায়। অন্যদিকে মিরপুর বেড়িবাধ রাস্তা দিয়েও উত্তরা থেকে বের হওয়া যায়। মূল সড়কে উত্তরার শুরুটা এয়ারপোর্ট থেকে হয়ে শেষ হয়েছে আব্দুল্লাহপুর গিয়ে। সুবিশাল শপিংমল, লেক, স্কুল-কলেজ, মেডিক্যাল সেন্টার সব মিলে উত্তরা হয়ে উঠেছে উচ্চবিত্তের অন্যতম পছন্দের আবাসিক।

বসুন্ধরা  

নতুন শহর কিংবা পরিপূর্ণ আবাসিক হিসেবে এরই মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা। বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষও সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন উন্নত বিশ্বের আবাসিকের আদলে এলাকাটি গড়ে তুলতে। এ, বি, সি, ডি এমন নানা ব্লকে ভাগ করা হয়েছে বসুন্ধরা আবাসিক। জি ব্লক পর্যন্ত পুরোদমে বসবাস শুরু হয়েছে।

 

 

ফ্লাটের দামও অনেকটা সহনীয় এই আবাসিকে। বসুন্ধরায় রয়েছে খোলামেলা রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্টেডিয়াম, হাসপাতাল, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা। এর পশ্চিম প্রান্তে মেইন গেটের পাশেই রয়েছে ঢাকার বৃহৎ শপিংমল যমুনা ফিউচার পার্ক। উত্তরপ্রান্ত জুড়ে রয়েছে ঢাকার অন্যতম সুন্দর ৩০০ ফিট প্রশস্ত রাস্তা, আর দক্ষিণ পাশে ১০০ ফুট রাস্তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বসুন্ধরা। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-এমআরটি লাইন-১ ও যুক্ত হবার কথা রয়েছে বসুন্ধরা আবাসিকের সাথে। যার মাধ্যমে সহজেই আপনি এয়ারপোর্ট কিংবা মতিঝিলের দিকে যেতে পারবেন। এই আবাসিকে রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ভিকারুন্নিসা স্কুল ইত্যাদি।

যারা দেশে কিংবা দেশের বাইরে থেকে এসব এলাকায় ফ্লাট কিনতে বা বুকিং দিতে চান তারা চোখ বন্ধ করে বুকিং দিতে পারেন এপেক্স প্রপার্টিতে। কারন আপনি হয়ত হাজার মাইল দুরে আছেন, কিন্তু এপেক্স প্রপার্টির দক্ষ কর্মীরা রয়েছে ঢাকা শহরেই। আপনার হয়ে আপনার ফ্লাটের যাবতীয় কাজগপত্র যাচাই বাছাই করা থেকে শুরু করে আপনার ফ্লাটের চাবি বুঝিয়ে দেয়া পর্যন্ত টিম এপেক্স থাকবে আপনারই পাশে। তাই কোন বাড়তি চাপ না নিয়ে আজই বুকিং দিন এপেক্স প্রপার্টির মাধ্যমে।

 


There are no comments yet

^ Go up